আপনার ধারণা সঠিক না, আবার ভুল ও না । এগুলো হল ডার্ক ওয়েবে পাওয়া জিনিসগুলোর উদাহরণ। যেখানে ওয়েবসাইটের আইপি অ্যাড্রেস লুকানো থাকে এবং অ্যাক্সেসের জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের প্রয়োজন হতে পারে।যার মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট বিষয়বস্তু যা সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে সার্চ করা সম্ভব নয় । অন্য কথায়, গুগোলে আপনি যা খুঁজছেন তা যদি খুঁজে না পান, তাহলে সম্ভবত এটি কেবল ডিপ ওয়েব-এ পাবেন। কিন্তু ডিপ ওয়েবে অ্যাক্সেস করা কঠিন । আর যদি গুগোল এটি খুঁজে পেতে পারে, তাহলে এটি সারফেস ওয়েবে রয়েছে, যা ইন্টারনেটের প্রায় 0.03% করে।
ডিপ ওয়েব কি ?
ডিপ ওয়েব বলতে গুগোল, ইয়াহু এবং বিং -এর মতো স্ট্যান্ডার্ড সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের এমন কিছু অংশকে বোঝায় যা পুরোপুরি অ্যাক্সেসযোগ্য নয়। ডিপ ওয়েবে এমন পেইজ গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা ইন্ডেক্স করা হয়নি, ফি-ফর-সার্ভিস (এফএফএস) সাইট, ব্যক্তিগত ডেটাবেস এবং ডার্ক ওয়েব।
ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব কি এক ?
সাধারণ মানুষ ডার্ক ওয়েব এর সাথে ডিপ ওয়েব কে মিলিয়ে ফেলে । বাস্তবিক অর্থে ডার্ক ওয়েব হল ডিপ ওয়েবের একটি ক্ষুদ্র অংশ (0.01%)। বেশীর ভাগ মানুষেরই অজানা ডিপ ওয়েব নিয়ে। ধারণা করা হয় সারফেস ওয়েব থেকে ৪০০-৫০০ গুন বড় হচ্ছে ডিপ ওয়েব। ডিপ ওয়েব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
- ডিপ ওয়েব কে সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে অ্যাক্সেস করা সম্ভব না
- ডিপ ওয়েবের সকল সাইট ইনডেক্স করা যার ফলে সহজে অ্যাক্সেস করা সম্ভব হয় না
- ডিপ ওয়েব ইন্টারনেট জগতের সব থেকে বেশী তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে।
- ডিপ ওয়েব একই সাথে ইন্টারনেট কে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে
- ডিপ ওয়েব অত্যন্ত গোপনীয় ।
অপর দিকে ডার্ক ওয়েবে আমরা নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে এক্সেস করতে পারি । ডার্ক ওয়েব অপরাধী চক্র এর জন্য স্বর্গস্বরূপ। সেখানে সাধারণ ব্যাবহারকারীদের জন্য বিপদস্বরূপ। ডার্ক ওয়েবে সবকিছু গোপন থাকা সত্য়েও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা একটি পেজ ব্যান করে দিতে সক্ষম হয় ।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ডার্ক ওয়েব এবং ডিপ ওয়েব এর বিষয়টি ।
ডিপ ওয়েবের সুবিধা
ডিপ ওয়েব ব্যবহারকারীদের সারফেস ওয়েবের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য অ্যাক্সেস দেয় । এটিতে সাম্প্রতিক টিভি শো, আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় ডেটাবেজ এবং সারফেস ওয়েবে সেন্সর করা গল্পগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ডিপ ওয়েবের বেশিরভাগ ডেটা সারফেস ওয়েবে পাওয়া যায় না ।
গোপনীয়তা, যা সাধারণত এনক্রিপশন দিয়ে প্রদান করা হয়। কিন্তু ডিপ ওয়েবে এনক্রিপশন সার্ভিস সাইটগুলিকে তাদের কন্টেন্ট প্রদানকারী থেকে তাদের গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার সময় দূরে রাখার অনুমতি দেয়। সকল ধরনের ফিনটেক সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ডেটাবেজের এনক্রিপশন একান্ত প্রয়োজন, যা ডিপ ওয়েবে বিদ্যমান । নিরাপত্তা ছাড়া বিভিন্ন সংস্থাগুলি বা ব্যক্তিরা ইন্টারনেটে নিরাপদে আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করতে পারে না । সেই ক্ষেত্রে ডিপ ওয়েব সম্পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে।
ডিপ ওয়েবের খারাপ দিক
সম্ভবত ডিপ ওয়েবের সবচেয়ে গুরুতর সমালোচনা হল এটি ইন্টারনেটের উন্মুক্ততা এবং সমতাকে ক্ষুণ্ন করে। ৯০ -এর দশকে, আশা ছিল যে ইন্টারনেট প্রত্যেককে সবকিছু অ্যাক্সেস করার সমান সুযোগ দেবে। কিন্তু পরিবর্তে, ফি-ফর-সার্ভিস সাইটগুলি প্রিমিয়াম সরঞ্জামগুলিতে অ্যাক্সেস দেয় কেবল তাদের জন্য যারা তাদের সামর্থ্য রাখে। অনেক ক্ষেত্রে, গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামগুলির শত শত এমনকি হাজার হাজার ডলাের খরচ হয়, যা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে।
ডার্ক ওয়েব ডিপ ওয়েবের জন্য সমস্যার আরেকটি সেট তৈরি করে। অপরাধীরা ডার্ক ওয়েব ব্যাবহার করে অপরাধ সংগঠন করে। কিছু ক্ষেত্রে, ডার্ক ওয়েবের পিছনে লুকিয়ে থাকা লোকেরা সারফেস ওয়েবে বৈধ ব্যবহারকারীদের আক্রমণ করে, যার ফলে প্রত্যেকের জন্য ইন্টারনেটের মান হ্রাস পায়।
বাস্তবিক অর্থে আজ পর্যন্ত যত কিছু আবিষ্কার হয়েছে সব কিছুর ই ভালো মন্দ দিক রয়েছে । আমাদের উচিত এই ভালো মন্দের মাঝে থেকে ভালো দিকটাই বেছে নেয়া। প্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যাবহার করে মানব জাতিকে এক উন্নত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে হবে।
All Comments